রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন

খাল ভরাট করে করাতকল-দোকান নির্মাণ, জলাবদ্ধতার শঙ্কায় এলাকাবাসী

মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ মাদারীপুরে সরকারি খাল ভরাট করে দোকানঘর ও করাতকল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শত বছরের পুরোনো খালটি বন্ধ হওয়ায় পানিনিষ্কাশনব্যবস্থা ব্যাহত হয়ে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা হেমায়েত তালুকদার নামে এক ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে আইনবহির্ভূত খালটি ভরাট করেছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

এদিকে খালের অপর পাশে অর্ধশতাধিক পরিবার স্বাধীনতার পর থেকেই সেতুর অভাবে বাঁশের সাকো ব্যবহার করে যাতায়াত করছেন। ব্যক্তি প্রয়োজনে ভরাট করা সরকারি খালটি পুনরুদ্ধার করে একটি সেতুর দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর খোয়াজপুর ইউনিয়নের মঠের বাজার এলাকার ১ নং খতিয়ানভুক্ত শত বছরের পুরোনো সরকারি খাল ভরাট করে করাতকল ও দোকানপাট নির্মাণ করেন হেমায়েত। আড়িয়াল খাঁ ও কীর্তিনাশা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত এ খালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়ে বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

দীর্ঘদিন ধরে খালটি আশপাশের মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহার, নৌযান চলাচলের পাশাপাশি কৃষিকাজের জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছিল। কিন্তু এটি বন্ধ করায় নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে মানুষ।

এদিকে এলাকাবাসীরা জানান, খালের অপর পাশে রয়েছে অর্ধশতাধিক পরিবারের বসবাস। স্থানীয় হাটবাজার স্কুল-কলেজ মসজিদসহ দৈনন্দিন কাজে খাল পাড়ি দিতে হয় তাদের। একটি ব্রিজ বা কালভার্টের অভাবে যুগ যুগ ধরে পারাপারের একমাত্র ভরসা তাদের বাঁশের সাঁকো। সাঁকো পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নিতে গিয়েও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। শত বছরের পুরোনো খালটি পুনরুদ্ধার করে তাদের ভোগান্তির অবসানের জন্য একটি সেতুর দাবি জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস ছালাম বলেন, আমরা কোনো যানবাহন নিয়ে বাড়িতে যেতে পারি না। সাঁকো নিয়ে যাতায়াত করার কারণে আমাদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। হেমায়েত তালুকদার ক্ষমতা দেখিয়ে তার নিজের স্বার্থের জন্য খালটি ভরাট করেছে। এতে এবার জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সামনের বর্ষায় পানি বাড়লে আমাদের বাড়িঘর তলিয়ে যেতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা সায়েদ বলেন, হাটবাজার থেকে শুরু করে স্কুল-মাদরাসা সবকিছুই খালের ওপারে। ছোট ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যেতে হয় সাঁকো পাড়ি দিয়ে। এতে আমাদের সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। গভীর রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেতু না থাকায় আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। হেমায়েত তালুকদার খালটি ভরাট করে অপর পাশে স-মিল, দোকানপাট নির্মাণ করেছে। আমার চাই খালটি পুনরুদ্ধার করে একটি সেতু নির্মাণ করা হোক।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে হেমায়েত তালুকদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনুদ্দিন বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি আইনবহির্ভূত সরকারি খাল ভরাট করে থাকে, তাহলে এ ব্যাপারে আমরা তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com